রামু উপজেলা থেকে দূর্নীতির দ্বায়ে অভিযুক্ত জনস্বাস্থ্য অফিসের কর্মচারী (মেকানিক) ইফতেখার উদ্দিন এর শাস্তিমূলক ফেনী জেলাতে বদলী হওয়ার বছর না পেরুতেই আবারো রামু উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে যোগদান করেছে। ৪ ফেব্রæয়ারী চট্টগ্রাম সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: আলী আজগর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে দূর্নীতিবাজ কর্মচারী ইফতেখার উদ্দিনকে ঈদগাঁও থেকে রামু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসে বদলী আদেশ করা হয়েছে। এতে চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছে রামু সর্বস্থরের জনপ্রতিনিধি এবং সচেতন মহল।
তাদের দাবী উপর মহলে টাকা বিলিয়ে এভাবে দূর্নীতিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিলে কিভাবে মাঠ পর্যায়ে অনিয়ম দূর্নীতি বন্ধ হবে। তাই দ্রæত ইফতেখার উদ্দিনের রামুতে বদলী আদেশ প্রত্যহার করার দাবী জানান সাধারণ মানুষ।
২২ সালের ১৯ অক্টোবর রামু উপজেলা গর্জনিয়া এলাকার ফরিদুল আলম জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন রামু উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে কর্মরত মেকানিক ইফতেখার উদ্দিন রামু উপজেলা জুড়ে দূর্নীতির আখড়া তৈরি করেছিল,প্রতিটি সরকারি কাজে নিয়ম বর্হিভূত ভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায়,গ্রাম পর্যায়ে টিউবয়েল স্থাপনে টাকা আদায়, সরকারি ভাবে ডিপমটর বসানোর খেত্রে ৭/৮ টাকা ঘুষ গ্রহন সহ অফিসের প্রতিটি কাজে ব্যপক অনিয়ম দূর্নীতি করে আসতো। তৎকালীন সময়ে ইফতেখার উদ্দিনের বিরুদ্ধে ঢাকার প্রধান প্রকৌশলী এবং দূর্নীতি দমন কমিশন সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেছিল জনপ্রতিনিধি সহ অনেক রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ।
তার প্রেক্ষিতে গত বছরের ১৩ মার্চ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নির্দেশে ইফতেখার উদ্দিনকে ফেনী জেলায় শাস্তিমূলক বদলী করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই ইফতেখার উদ্দিন টাকার জোরে আবারো কক্সবাজারের ঈদঁগাও উপজেলাতে বদলী হয়ে আসে। কথায় আছে কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না। সেখানে তার দূর্নীতির প্রসার ঘটিয়েছে ইফতেখার।
এব্যাপারে জানতে ঈদঁগাওর পোকখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,দূর্নীতি এখন কোথায় নাই জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের ইফতেখারের নামে অনেক অভিযোগ জানিয়েছিল আমাদের এলাকার লোকজন,এসব বিষয় আমি ইউএনও কে জানিয়েছিলাম।
এদিকে রামু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন বলেন,ইফতেখার উদ্দিনকে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চিনি,সে দূর্নীতির আতোড়ঘর তৈরি করেছিল রামুতে এমনকি সে ঠিকাদারীর সাথেও জড়িত ছিল। তাই আমরা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছিলাম এখন যদি সে আবার রামুতে আসে আমরা কোন ভাবেই তা মেনে নেব না। এটা প্রতিহত করা হবে। আমি কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী সহ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
রামু উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোয়েব সাঈদ বলেন,আমি যুতটুকু জানি জনস্বাস্থ্য অফিসের ইফতেখার উদ্দিনের ব্যাপারে অনেক দূর্নীতির অভিযোগ ছিল,তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিউজ হয়েছিল। এখন হঠাৎ করে সে যদি আবারো রামুতে বদলী হয়ে আসে এটা কোন ভাবেই ঠিক হবে না।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন রামু উপজেলা কমিটির সভাপতি মাস্টার মোহাম্মদ আলম বলেন,দূর্নীতিবাজরা যদি এক বছর না পেরুতেই আবারো সেই কর্মস্থলে আসতে পারে তাহলে কিভাবে দূর্নীতি বন্ধ হবে। সেখানে তার পুরানো সিন্ডিকেটদের আবারো সক্রিয় করে সব লুটপাট করবে। তাই ইফতেখার উদ্দিনকে রামুতে বদলী আদেশ না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
এ ব্যপারে রামু উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কাছাই মং জানান,উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বদলী আদেশ করলে আমি সেটা না মানার কিছু নাই। সে যদি আবারো কোন অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়ে তখন আবারো তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবুল মনজুর বলেন, ইফতেখার উদ্দিনের বদলী আদেশ হয়েছে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সেখানে আমাদের করণীয় নাই। তবে দায়িত্বপালন যদি কেউ কোন ধরনে অনিয়ম করে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্রঃ কক্সবাজার সমাচার
Leave a Reply