মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ যুদ্ধের ভয়াবহতায় সীমান্ত নিরাপত্তায় টহল বৃদ্ধির পাশাপাশি ঘুমধুম সীমান্তের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে আর কে-৩ কোর্সার অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল (এটিজিএম) মোতায়েন করা হয়েছে।
৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মাশরুকী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি মিয়ানমার সীমান্তে ব্যাপক সংঘর্ষ, মর্টারশেল নিক্ষেপ, গুলি ও বোমা বিস্ফোরণের পর অত্যাধুনিক এই অস্ত্রটি মোতায়েন করা হয়।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র ঘুমধুম সীমান্ত চৌকিসহ আরও বেশ কয়েকটি চৌকিতে এটিজিএম অস্ত্রটি মোতায়েন করা হয়েছে।
এটিজিএম হলো ইউক্রেনের তৈরি হালকা বহনযোগ্য ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। এটি দিয়ে স্থির ও চলমান সাঁজোয়া যান এমনকি হেলিকপ্টারেও আক্রমণ করা যায়। ২০০০ সালে ইউক্রেনে এই অস্ত্রটি তৈরি হয়।
সীমান্তে অত্যাধুনিক এই অস্ত্রটি মোতায়েনের ফলে সীমান্ত সুরক্ষা ও নিরাপত্তার পাশাপাশি, বিজিবির আধুনিকায়নে আরও এক ধাপ উন্নতি হলো বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
সম্প্রতি ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি মর্টারশেল ও গুলি এসে পড়ে। এতে দুজন নিহত ও চারজন আহত হয়। সীমান্তের ওপারে হেলিকপ্টার থেকেও ব্যাপক গুলি ও বোমা বর্ষণ করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে বিজিবি কড়া প্রতিবাদও জানায়। তুমব্রু সীমান্তে গতকাল সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা সীমান্ত থেকে পাওয়া দুটি রকেট লাঞ্চার বোম নিষ্ক্রিয় করেছে। বিকট শব্দে এগুলো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়। এসময় সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
সীমান্তে গোলাগুলি না হওয়ায় পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী বেশিরভাগ লোকজনই এখন ঘরে ফিরেছে। তবে যে ৫টি স্কুল বন্ধ করা হয়েছিল সেগুলো এখনও খোলা হয়নি।
পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক হয়ে গেলে স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদুল আলম হুসাইনি।
অন্যদিকে, আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ঘুংধুম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়া সাপেক্ষে বাংলাদেশ অবস্থানকারী মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যদের সে দেশে নিয়ে যাওয়া হবে।
Leave a Reply