নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিগত ১৫ বছরে শত কোটি টাকা সম্পদের মালিক এক সময়ের দুর্দান্ত প্রতাপশালী কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ এর সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমানে’র একান্ত আস্থাভাজন লিয়াকত আলী প্রঃ ভুট্রো। তিনি কক্সবাজার পৌরসভার চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ও কক্সবাজার পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ড এর অন্তর্গত পূর্ব সিকদার পাড়া গ্রামের মৃত বেলায়েত হোসেনের পুত্র। বেশীরভাগ সম্পদ ক্রয় করেছেন তার স্ত্রী ও সন্তানের নামে। সম্প্রতি কালো টাকা বৈধ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন এই ভুট্টো।
মুজিবুর রহমান কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র থাকালীন এই আস্থাভাজন লিয়াকত আলী ভুট্টো প্রভাব কাটিয়ে রোহিঙ্গা ভোটার, দলিল জালিয়াতি,ভুয়া ওয়ারিশ সনদ তৈরি, ইয়াবা সহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িয়ে গড়ে তুলেছেন শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ এমনটাই জানা গেছে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় লিয়াকত আলী ভুট্টো ও তার স্ত্রী নাজমা চৌধুরী এবং পুত্র মাহিম প্রকাশ বাবুর নামে রয়েছে কোটি কোটি টাকার জায়গা জমি,ফ্ল্যাট বাড়ি,ব্যবসা প্রতিষ্টান ও বহুতল ভবন। এব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক দুটি অভিযোগ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৌরসভায় চাকরির সুবাধে সে কাগজপত্র জালিয়াতি করে বিভিন্ন ভূয়া ওয়ারিশ সনদ বানাতো। যেসব জায়গা জমি ওয়ারিশী সমস্যা আছে সেসব জায়গার ভুয়া দলিল ও খতিয়ান সৃজিত করে জোরপূর্বক রেজিষ্ট্রী করে নিতো। এব্যাপারে ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতির কারনে তার বিরুদ্ধে একাধিক জালিয়াতি মামলাও রয়েছে। তৎমধ্যে একটি মামলার বাদী তার আপন ছোট ভাই মোরশেদ আলী।
বিভিন্ন জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সে বিগত ১৫ বছরে গড়ে তুলেছে নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। অভিযোগে তার বেশ কিছু সম্পদের বিবরন রয়েছে তৎমধ্যে উল্লেখযোগ্য, কক্সবাজার শহরের কলাতলী দুটি আলিশান ফ্লাট বাড়ি, বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় “মেসার্স তাসনিম ইলেকট্রনিক্স” নামীয় ৩কোটি টাকা সমমূল্যের ব্যবসা প্রতিষ্টান ও বিজিবি ক্যাম্প সিকদার পাড়ায় কোটি টাকা মূল্যের জায়গার উপর আলিশান বহুতল ভবন। এছাড়াও তার স্ত্রী ও সন্তানের নামে দুই’শ কাঠার কাছাকাছি জায়গা জমির খতিয়ান নম্বর সহ উল্লেখ রয়েছে।
তৎসময়ের পৌর মেয়র মুুজিবুর রহমানের শ্যালক পরিচয় দিয়ে এবং জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য পরিচয়ে বীরদর্পে দাপিয়ে বেড়াতো লিয়াকত আলী ভুট্টো। তাই ভোক্তভোগীরা কেউ ভয়ে মুখ খোলেনি এতদিন।
নাম জানাতে অনিচ্ছুক প্রতারনার শিকার এক ভোক্তভোগী বলেন , সে দূর্দান্ত চিন্তা ভাবনার মানুষ। সে কাগজপত্রের সূক্ষ্ম বিষয়ে খুবি দক্ষ। তাই তাকে আমরা জালিয়াত চক্রের জেলার শীর্ষ বলে আখ্যা দিয়ে থাকি। তার বিরুদ্ধে পাহাড় সমান অভিযোগ থাকলেও মিডিয়া ও প্রশাসন নিশ্চুপ। একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হয়ে কিভাবে এত সম্পদ অর্জন করলো আমাদের বোধগম্য নয়। ভুট্টো ও তার স্ত্রী, সন্তানের ব্যাংক হিসাব তলব ও সম্পদের বিবরণী চাওয়া হউক। সে সাথে তার অবৈধ সম্পদ খতিয়ে দেখে ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়ে তাকে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানান।
নাম জানাতে অনিচ্ছুক পৌরসভার বর্তমান এক কমিশনার জানান, তিনি সুবিধাবাদী মানুষ। যখন যে চেয়ারম্যান হয় সে তার কাছের লোক হয়ে যায় ওভাবেই সে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে থাকে। হঠাৎ কোটিপতি হওয়া তার অবৈধ সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো জানান, তার হঠাৎ পরিবর্তন ও বেশ কিছু সম্পদ অর্জন আসলে চোখে পড়ার মত।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে লিয়াকত আলী ভুট্টোর ব্যবহৃত মুঠোফোনে অনেকবার যোগাযোগ হলে ফোন ধরেননি। পরে তার স্ত্রীর ব্যবহৃত নাম্বারে ফোন করলে তাকে পাওয়া সম্ভব হয়েছে। দুদকের অভিযোগের ব্যাপারে তিনি অবগত নয় বলে জানান। দুদকের অভিযোগে উল্লেখিত অবৈধ সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে কোন সদোত্তর পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply